Posts in Category: "ব্যাকরণ"

ভাবচাচক বিশেষ্য; যৌগিক ক্রিয়া; মিশ্রক্রিয়া- নির্ণয়ের টেকনিক, পড়লেই মুখস্থ!
ভাবচাচক বিশেষ্য; যৌগিক ক্রিয়া; মিশ্রক্রিয়া- নির্ণয়ের টেকনিক, পড়লেই মুখস্থ!

ভাবচাচক বিশেষ্য; যৌগিক ক্রিয়া; মিশ্রক্রিয়া- নির্ণয়ের টেকনিক, পড়লেই মুখস্থ!জানতে চেয়েছেন, @ABDULLAH ARMAN নামের এক ভাই। তাই রিপ্লাই না দিয়ে আপনাদের কথা বিবেচনা করে সরাসরি পোস্ট করে ফেললাম।ভাববাচক বা ক্রিয়া বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে কোন ক্রিয়া বা কাজের নাম বোঝায়, তাকে ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: গমন, দর্শন, ভোজন, শয়ন, চলন, পঠন, করা, দেখা, পড়া, বলা, খাওয়া, দেওয়া, নেওয়া, যাওয়া, করানো, নামানো, পড়ানো ইত্যাদি।TechniQue:ধাতু + আ/অন/আনো = ভাববাচক বিশেষ্য।যেমন: দেখা (দেখ্ + আ); খাওয়া (খা + আ); গমন (গম্ + অন); করানো (কর্ + আনো)। এভাবে উপরের সবগুলোই হবে।যৌগিক ক্রিয়া: একটি সমাপিকা ক্রিয়া ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া যদি একত্র একটি বিশেষ বা সম্প্রসারিত অর্থ প্রকাশ করে তবে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমন: পাকা আমটি খেয়ে ফেল। এই বাক্যে ‘খেয়ে ফেল’ যৌগিক ক্রিয়া।TechniQue:অসমাপিকা ক্রিয়া + সমাপিকা ক্রিয়া = যৌগিক ক্রিয়া।যেমন: পাকা আমটি খেয়ে ফেল। এখানে ‘খেয়ে ফেল’ (অসমাপিকা + সমাপিকা) = যৌগিক ক্রিয়া। এভাবে সকল উদাহরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।মিশ্র ক্রিয়া: বিশেষ্য, বিশেষণ ও ধ্বন্যাত্বক অব্যয়ের সঙ্গে কর, হ্, দে, পা, যা, কাট্, গা, ছাড়, র্ধ, র্মা প্রভৃতি ধাতুযোগ গঠিত ক্রিয়াপদ বিশেষ বিশেষ অর্থে মিশ্র ক্রিয়া গঠন করে। যেমন:বিশেষ্যের পরে: আমরা তাজমহল দর্শন করলাম।বিশেষণের পরে: তোমাকে দেখে বিশেষ প্রীত হলাম।ধ্বন্যাত্বক অব্যয়ের পরে: মাথা ঝিম ঝিম্ করছে।TechniQue:বিশেষ্য/বিশেষণ/ ধ্বন্যাত্বক + ক্রিয়াপদ = মিশ্রক্রিয়া।যেমন: আমরা তাজমহল দর্শন করলাম। এখানে ‘দর্শন’ বিশেষ্য পদ (ভাববাচব বিশেষ্য-উপরে দেখুন) এবং ‘করলাম’ ক্রিয়াপদ = মিশ্রক্রিয়া।এভাবে, প্রীত (বিশেষণ) হলাম (ক্রিয়াপদ) - একত্র মিশ্রক্রিয়া। ঝিম ঝিম (অনুকার/ধ্বন্যাত্মক) করছে (ক্রিয়াপদ) - একত্র মিশ্রক্রিয়া।

হিতৈষী শব্দের সন্ধি ও ‘এ মাটি সোনার বাড়া’ উদ্ধৃতির বিশ্লেষণ
হিতৈষী শব্দের সন্ধি ও ‘এ মাটি সোনার বাড়া’ উদ্ধৃতির বিশ্লেষণ

গত কয়েকদিন আগে এক পাঠক ভাই (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) ২টি প্রশ্ন করেছেন। নিম্নে প্রশ্ন ২টি দেওয়া হলো—প্রশ্ন-০১:‘হিতৈষী’ শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ— (হিত + এষী) না কি (হিত + ঐষী)?প্রশ্ন-০২:‘এ মাটি সোনার বাড়া’— এ উদ্ধৃতিতে ‘সোনা’ কোন অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে?— উত্তর: বিশেষণের অতিশায়ন। কিন্তু কীভাবে এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা লাগবে, স্যার।১ম প্রশ্নের ব্যাখ্যা ও সঠিক উত্তর:‘হিতৈষী’ শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ নির্ণয় করতে গিয়ে সাধারণত শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ভুল করতে দেখা যায়। যেমন: হিত + ঐষী নাকি হিত + এষী। আসুন দেখে নেওয়া যাক কোনটি শুদ্ধ—‘হিতৈষী’ শব্দের অর্থ মঙ্গল করতে ইচ্ছুক এমন। আর ‘এষা’ শব্দটির অর্থ কামনা এবং ‘এষী’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে- কামনাকারী। তবে ‘ঐষী’ বলে বাংলা ভাষায় কোনো অর্থবোধক শব্দ নেই। যেহেতু ‘ঐষী’ শব্দের অর্থ নেই, সেহেতু ‘ঐষী’ শব্দটি সাধারণভাবেই বাদ পড়বে। সুতরাং হিতৈষী = হিত + এষী। অর্থগতভাবে- হিতৈষী (হিত + এষী) শব্দের অর্থ দাঁড়ালো মঙ্গল কামনাকারী।অতিরিক্ত তথ্য: ‘এষা’ নামক কাব্যটি লিখেছেন অক্ষয়কুমার বড়াল।২য় প্রশ্নের ব্যাখ্যা ও সঠিক উত্তর:কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতায় দরিদ্র উপেনের শেষ সম্বল ছিল দুই বিঘা জমি। আর এই জমিতে তাদের সাত পুরুষের স্মৃতি জড়িয়ে আছে এবং এই জমিটি তার কাছে সোনার চেয়েও অধিক মূল্যবান। উপেন এবং তার বংশধরদের পুরোনো স্মৃতিতে পরিপূর্ণ এ জমি তার কাছে সোনার বা যেকোন ধন-সম্পদের ঊর্ধ্বে বোঝাতে সোনার বাড়া কথাটি ব্যবহার হয়েছে।‘এ মাটি সোনার বাড়া’— শব্দটি খাঁটি বাংলা শব্দের অতিশায়ন। বিশেষণ পদ যখন দুই বা ততোধিক বিশেষ্য পদের মধ্যে গুণ, অবস্থা ,পরিমাণ প্রভৃতি বিষয়ে তুলনায় একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বুঝিয়ে থাকে, তাকে বিশেষণের অতিশায়ন বলে। কখনো কখনো ৬ষ্ঠী বিভক্তিযুক্ত শব্দে ৬ষ্ঠী বিভক্তিই চেয়ে, থেকে শব্দের কার্যসাধন করে। এখানে মাটিকে সোনার চেয়ে বড় বা মূল্যবান মনে করা হয়েছে। তাই উপরিউক্ত ‘এ মাটি সোনার বাড়া’— এ উদ্ধৃতিতে ‘সোনা’ বিশেষণের অতিশায়ন অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে।আশা করি ব্যাখ্যা ২টি আপনি খুব সুন্দর বুঝতে পেরেছেন এবং আপনার জানার আগ্রহের আকাঙ্ক্ষা মেটাতে সক্ষম হয়েছে।

বই ও কোর্স বিষয়ে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি?
WhatsApp