Posts tagged: "শব্দভান্ডার"

"‘কারী’ না ‘কারি’? বাংলায় সঠিক ব্যবহার ও নিয়ম"
"‘কারী’ না ‘কারি’? বাংলায় সঠিক ব্যবহার ও নিয়ম"

শেষে কারি; কারী নির্ণয়ের কৌশল→ সহকারি নাকি সহকারী? → সরকারি নাকি সরকারী? এরূপ অনেক শব্দ আছে যা আমরা প্রায় সময় ভুল করে থাকি। কখন ‘ই-কার’ আর কখন ‘ঈ-কার’ হবে তা নিয়ে দুটি নিয়ম বলব একটি বেসিক নিয়ম আর আরেকটি মনে রাখার টেকনিক। সুতরাং আশা করা যায় আজকে থেকে আর এটি ভুল হবে না।বেসিক নিয়ম: অ-তৎসম (অর্ধ-তৎসম, তদ্ভব বা বাংলা, দেশি, বিদেশি) শব্দে ‘ই-কার’ হবে আর কেবল তৎসম শব্দে ‘ঈ-কার’ হবে। যেমন— ‘সহকারী’ শব্দটি তৎসম ভাষার শব্দ তাই ঈ-কার হয়েছে। এরূপ— অধিকারী, উপকারী, অপকারী, আবেদনকারী, ছিনতাইকারী, বহনকারী, শ্রবণকারী, নির্মাণকারী ইত্যাদি। অন্যদিকে— ‘সরকারি’ শব্দটি অ-তৎসম (ফারসি) ভাষার শব্দ তাই ই-কার হবে। এরূপ— সরকারি, দরকারি, তরকারি, পাইকারি ইত্যাদি।অতিরিক্ত তথ্য: ‘ঈ-কার’ প্রত্যয়যুক্ত শব্দের সঙ্গে ‘গণ’ যোগ করলে ঈ-কারের পরিবর্তে ই-কার হবে। যেমন— সহকারী > সহকারিগণ, আবেদনকারী > আবেদনকারিগণ ইত্যাদি।টেকনিক পার্ট —→ শব্দটি ব্যক্তিবাচক হলে 'কারী' হবে। যেমন— সহকারী, অধিকারী, উপকারী, অপকারী, আবেদনকারী, ছিনতাইকারী, বহনকারী, শ্রবণকারী, নির্মাণকারী ইত্যাদি। আর শব্দটি বস্তুবাচক হলে 'কারি' হবে। যেমন— সরকারি, দরকারি, তরকারি, পাইকারি ইত্যাদি।

একই নিয়মে সন্ধি ও বানান [গুরুত্বপূর্ণ]
একই নিয়মে সন্ধি ও বানান [গুরুত্বপূর্ণ]

একই নিয়মে সন্ধি ও বানান [গুরুত্বপূর্ণ]→ অত্যাধিক নাকি অত্যধিক? → অধ্যাবসায় নাকি অধ্যবসায়? → ব্যাবসায় নাকি ব্যবসায়? → ব্যাখ্যা নাকি ব্যখ্যা? → ব্যাহত নাকি ব্যহত? বেশ কিছুদিন থেকে পাঠকরা একটি বানানের নিয়ম জানতে চাচ্ছে, সেটি হলো শব্দের শুরুতে কখন ‘ব্য’ এবং কখন ‘ব্যা’— এর নিয়ম। এই নিয়মটির জন্য অনেক শিক্ষার্থী আমার গ্রুপসহ অনেক গ্রুপেও প্রশ্ন করছেন। কিন্তু লক্ষ করে দেখলাম পাঠকরা আশানুরূপ ব্যাখ্যা পাচ্ছে না। আজকে আপনাদের এই ‘ব্য’ এবং ‘ব্যা’-সহ আরও যে সকল শব্দের বানানে কখন য-ফলা (্য)’র পরে আ-কার (া) হবে আর কখন আ-কার (া) হবে না, তা একটি খুব সহজ সূত্র দিয়ে বুঝাতে পারব ইনশআল্লাহ।[প্রথমে বলে রাখা ভালো, সন্ধি বানান শুদ্ধিকরণের একটি বৃহৎ অংশ। সুতরাং সন্ধি-বিচ্ছেদের নিয়ম দিয়ে অনেক বানান শুদ্ধি করা যায়; আজকের নিয়মটিও এর ব্যতিক্রম নয়।]→ নিয়ম: সন্ধি-বিচ্ছেদের নিয়মানুসারে— যদি কোনো শব্দে য-ফলা (্য) থাকে তাহলে তার বিচ্ছেদে সেই য-ফলা (্য)’র স্থলে ই-কার এবং পরের অংশে সাধারণত অর্থবোধক শব্দ হবে।→ নিয়মের শর্টকাট: য-ফলা (্য) = ( ি) + অর্থবোধক শব্দ।এবার উপরের বানানগুলো দেখা যাক—১। অত্যাধিক নাকি অত্যধিক? প্রথমে দুটি শব্দকে নিয়ম দিয়ে ভেঙে নিব। অত্যাধিক = অতি + আধিক; অত্যধিক = অতি + অধিক [বলে রাখা ভলো, য-ফলা (্য)’র পরে কোনো কার না থাকলে বিচ্ছেদের পরের শব্দের শুরুতে অতিরিক্ত একটি ‘অ’ যুক্ত হবে, তাই অ+ধিক (অধিক) হয়েছে।] এবার লক্ষ করুন, সন্ধি বিচ্ছেদের পরের অংশের দুটি শব্দ ‘আধিক’ ও ‘অধিক’। সূত্রানুসারে— শব্দ দুটির মধ্যে ‘আধিক’ শব্দটি অর্থবোধক নয়, তাই ‘অত্যাধিক’ বানান ভুল। অন্যদিক— ‘অধিক’ শব্দটি অর্থবোধক তাই ‘অত্যধিক’ বানানটি শুদ্ধ।২। অধ্যাবসায় নাকি অধ্যবসায়? অধ্যাবসায় = অধি + আবসায়; অধ্যবসায় = অধি + অবসায় (য-ফলার পরে কার না থাকলে অতিরিক্ত ‘অ’ পাব)। সুত্রানুসারে— ‘আবসায়’ শব্দটি অর্থবোধক নয়; তাই ‘অধ্যাবসায়’ বানান ভুল। অন্যদিক— ‘অবসায়’ শব্দটি অর্থবোধক তাই ‘অধ্যবসায়’ বানানটি শুদ্ধ।৩। ব্যাবসায় নাকি ব্যবসায়? ব্যাবসায় = বি + আবসায়; ব্যবসায় = বি + অবসায় (য-ফলার পরে কার না থাকলে অতিরিক্ত ‘অ’ পাব)। সূত্রানুসারে— ‘আবসায়’ শব্দটি অর্থবোধক নয়; তাই ‘ব্যাবসায়’ বানান ভুল। অন্যদিক— ‘অবসায়’ শব্দটি অর্থবোধক তাই ‘ব্যবসায়’ বানানটি শুদ্ধ।৪। ব্যাখ্যা নাকি ব্যখ্যা? ব্যাখ্যা = বি + আখ্যা; ব্যখ্যা = বি + অখ্যা (য-ফলার পরে কার না থাকলে অতিরিক্ত ‘অ’ পাব)। সূত্রানুসারে— ‘আখ্যা’ শব্দটি অর্থবোধক তাই ‘ব্যাখ্যা’ বানানটি শুদ্ধ। অন্যদিকে— ‘অখ্যা’ শব্দটি অর্থবোধক নয়; তাই ‘ব্যখ্যা’ বানানটি ভুল।৫। ব্যাহত নাকি ব্যহত? ব্যাহত = বি + আহত; ব্যহত = বি + অহত (য-ফলার পরে কার না থাকলে অতিরিক্ত ‘অ’ পাব)। সূত্রানুসারে— ‘আহত’ শব্দটি অর্থবোধক তাই ‘ব্যাহত’ শব্দটি শুদ্ধ। অন্যদিকে— ‘অহত’ শব্দটি অর্থবোধক নয়; তাই ‘ব্যহত’ বানানটি ভুল।উপরের নিয়মানুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলি দেওয়া হলো—অধ্যক্ষ (অক্ষ), অধ্যয়ন (অয়ন), অধ্যাদেশ (আদেশ), অধ্যায় (আয়), ব্যতীত (অতীত), ব্যতিক্রম (অতিক্রম), ব্যর্থ (অর্থ), ব্যয় (অয়), ব্যগ্র (অগ্র), ব্যক্ত (অক্ত), ব্যক্তি (অক্ত+ই), ব্যঞ্জন (অঞ্জন), ব্যধিকরণ (অধিকরণ), ব্যতিহার (অতিহার), ব্যবহার (অবহার), ব্যবস্থা (অবস্থা), ব্যবচ্ছেদ (অবচ্ছেদ), ব্যাকুল (আকুল), ব্যাকরণ (আকরণ), ব্যাঘাত (আঘাত), ব্যাকুতি (আকুতি), ব্যারাম (আরাম), ব্যাহার (আহার), ব্যাহরণ (আহরণ), ব্যাবর্তন (আবর্তন), ব্যাধি (আধি)।ব্যতিক্রম-০১: ব্যথা, ব্যথিত।ব্যতিক্রম-০২: বিদেশি শব্দের বানানের উচ্চারণ অনুযায়ী ‘ব্যা’ হবে। যেমন— ব্যাংক, ব্যাট, ব্যাগ, ব্যান্ড, ব্যানার, ব্যান্ডেজ, ব্যাটারি, ব্যারিস্টার, ব্যালট, ব্যারোমিটার।

বই ও কোর্স বিষয়ে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি?
WhatsApp